শিক্ষা সফর ২০১৬
বালুতুপা- রাজশাহী
1.বরেন্দ্র গবেষণা যাদুগর
কিভাবে যাওয়া যায়: রাজশাহী জিরোপয়েন্ট থেকে আনুমানিক ৮০০ মিটার পশ্চিমদিকে প্রধান সরকের উত্তরে অবস্থিত রিক্সাতে,অটোতে যাওয়াযায়।
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রত্নতাত্ত্বিক সংগ্রহশালা বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর রাজশাহী শহরের কেন্দ্রস্থল হাতেম খাঁন মহল্লায় অবস্থিত। বঙ্গীয় শিল্পকলার অপূর্ব সমাহারে সমৃদ্ধ এই সংগ্রহ শালাটি রাজশাহী তথা বাংলাদেশের গর্ব এবং অহংকার। বরেন্দ্র অঞ্চলের রাজন্যবর্গ, সমসাময়িক জ্ঞানী, গুণী ও পন্ডিতজন এখানকার নিজস্ব ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য ১৯১০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর। ১৮৬০ সালের ভারতীয় সমিতি আইন অনুযায়ী ১৯১৪ সালে বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর নিবন্ধন লাভ করে। ভারতবর্ষে প্রাচীনকাল থেকেই শিল্পকলার একাধিক ঘরানা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে বিখ্যাত হচ্ছে গান্ধারা, সারনাথ, মথুরা, মগধ এবং বরেন্দ্র ঘরানা। বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর বরেন্দ্র ঘরানাকে প্রতিনিধিত্ব করছে। বরেন্দ্র অঞ্চলের যশস্বী ভাস্কর ধীমান ও তার পুত্র বীতপালের নেতৃত্বধীনে পাল আমলে এই অঞ্চলের বিশেষ ঘরানার প্রতিনিধিত্বশীল ভাস্কর শিল্পের একটি বিদ্যালয় ছিল। বরেন্দ্র অঞ্চলের উদ্ধার করা সিংহভাগ ভাস্কর্য এই বিদ্যালয় থেকে সৃষ্ট। বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে প্রদর্শিত সুষমামন্ডিত শত শত মূর্তি, রাজ্যপালের ভাতুরিয়া লিপি, প্রথম মহিপালের রাজভিটালিপি, দেওপাড়া প্রশস্তি এবং লক্ষণ সেনের বাগবাড়ী প্রশস্তিতে বরেন্দ্রের নিজস্ব শিল্প ঘরানার যথার্থতা উন্মোচিত হয়েছে। বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে রয়েছে সমৃদ্ধশালী একটি পুঁথি সংগ্রহশালা। এছাড়াও রয়েছে প্রায় পনেরো হাজার দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থ ও পত্রিকা সমৃদ্ধ একটি গ্রন্থাগার। জাদুঘরে রক্ষিত প্রত্ননির্দশনগুলো নিয়ে সম্যক জ্ঞান লাভের জন্য সংশ্লিষ্ট বই পুস্তক জাদুঘরের গ্রন্থাগারে রয়েছে। জাদুঘরে মুসলিম ঐতিহ্য ও আবহমান বাংলা কক্ষের সংযোজন ঘটেছে। এছাড়াও জাদুঘরে সংরক্ষিত জৈব্য ও অজৈব্য পুরাবস্তু্ পরিচর্যার জন্য একটি আধুনিক সংরক্ষণশালা নির্মিত হয়েছে। প্রতিদিন শত শত বিদ্যার্থী, পর্যটক এবং জ্ঞানান্বেষীগণ এই প্রাচীন জাদুঘরটির বিশাল ও বৈচিত্র্যময় সংগ্রহ দেখে মুগ্ধ হন।
অবস্থান: রাজশাহী শহরে
২.শহীদ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা
কিভাবে যাওয়া যায়: জিরোপয়েন্টথেকে পশ্চিমদিকে আনুমানিক ৩ কি.মি. কোর্ট এর দিকে, প্রধান রাস্তার উত্তর পার্শ্বে, রিক্সা, অটোতে যাওয়াযায়।
ব্রিটিশ আমলে ইংরেজরা আমাদের দেশে ঘোড়দৌড় বা রেস খেলার প্রচলন করে। খেলা দেখা ও বাজি ধরায় প্রচন্ড উত্তেজানা সৃষ্টি হত। শহরাঞ্চলেই ঘোড়দৌড় মাঠ বা রেসকোর্স ছিল। রেসের নেশায় দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসতেন। অনেকে এ খেলায় সর্বস্বান্ত হয়েছে। কার্যত আয়োজকরাই লাভবান হয়েছে। রাজশাহী শহরের রেসকোর্স ছিল পদ্মার পাড়ে। এখন এই রেসকোর্স ময়দান রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা। রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার এক পুরনো তথ্য বিবরণী থেকে জানা যায়, রেসের পর এখানে টমটম বা ঘোড়াগাড়ী দৌড়ও হতো। রেস ও টমটম বন্ধ হওয়ার পর রাজশাহীর রেসকোস ময়দান দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত ছিল। উদ্যান প্রতিষ্ঠায় তৎকালীন মন্ত্রী শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও জেলা প্রশাসক আহম্মদ আব্দুর রউফ এর প্রচুর ভূমিকা ছিল। তাদের প্রচেষ্টায় ১৯৭২ সালে রাজস্ব বিভাগ হতে অনুমতি প্রাপ্ত ৩২.৭৬ একর এই জমিতেই কেন্দ্রীয় উদ্যান স্থাপিত হয় ও ৩ লক্ষ ৫৮ হাজার ৫শ টাকার ১টি প্রকল্প তৈরী করে টেস্ট রিলিফের টাকায় লেক খনন, সাইট উন্নয়ন ও কিছু বৃক্ষরোপণের ব্যবস্থাকরা হয়। মূল্যবান গাছের চারা রোপণ, ফুল গাছের কোয়ারি ও কুঞ্জ তৈরি, লেক ও পুকুর খনন, কৃত্রিম পাহাড় তৈরি অর্থাৎ সামগ্রিক কাজ শুরু হয় ১৯৭৪-৭৫ ও ১৯৭৫-৭৬ সালে। প্রকৃত পক্ষে ১৬/২/১৯৮৩ তারিখে চিড়িয়াখানার কার্যক্রম শুরু করাহয়।
অবস্থান: জিরোপয়েন্টথেকে পশ্চিমদিকে আনুমানিক ৩ কি.মি. কোর্ট এর দিকে, প্রধান রাস্তার উত্তর পার্শ্বে
৩.রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
কিভাবে যাওয়া যায়:
অবস্থান: মতিহার, রাজশাহী,রাজশাহী।
এখানে রয়েছে সাবাস বাংলাদেশ, শহীদ মিনার, বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ব, স্ফুলিঙ্গ ইত্যাদি।
4.শাহ মাখদুম রুপোশ (র.) এর মাযার
হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) এর সমাধি: মূল সমাধির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ যথাক্রমে ৯ ফুট ৭ ইঞ্চি ও ৬ ফুট ৭ ইঞ্চি। সমাধি সৌধের ভিতরের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ যথাক্রমে ১৭ ফুট সাড়ে ৩ ইঞ্চি ও ১৭ ফুট সাড়ে ৩ ইঞ্চি। সমাধির পশ্চিমধারে হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) এর ভাতিজা সম্পর্কিত হযরত শাহনূর (রহঃ) এর সমাধি বলে প্রচলন আছে। মসজিদের সামনে দরগার তোরণটি নির্মিত হয় বাংলা ১৩০৫ সালে। এটাতে আয়াতে কোরআন খোদিত একটি প্রাচীন লিপি আছে।
দরগার হুজুর খানা ও মসজিদ: দরগার হুজুর খানা রাজশাহীর প্রাচীন কৃষ্টি বৈশিষ্ট্যের প্রাচীনতম নিদর্শন। কাজী মোহাম্মদ মিছের তার রাজশাহীর ইতিহাস (১ম খন্ড) গ্রন্থে এটাকে শাহ মখদুমের হুজুর খানা বা সাধন পীঠ বলে অনুমান করেছে। তার মতে, এটাই রাজশাহী মহানগরীর প্রথম মসজিদ। এক গম্বুজ বিশিষ্ট হুজুর খানাটির পশ্চিম দেওয়ালে একটি ক্ষুদ্র মেহরাব ও পূর্ব দেওয়ালে একটি ছোট প্রবেশ পথ ছাড়া দরজা জানালা নাই। ভিতরে ৮/১০ জন একসঙ্গে নামাজ পড়বার মত জায়গা আছে। এর উত্ত-দক্ষিণ দৈর্ঘ্য ১৪ ফুট, পূর্ব-পশ্চিম প্রস্থ ১৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। প্রবেশ পথের দৈর্ঘ্য ৪ ফুট সাড়ে ৩ ইঞ্চি, উচ্চতা ১১ ফুট ৫ইঞ্চি, গম্বুজের উপরের পরিসর ১৫ ফুট ৯ ইঞ্চি।
তিন গম্বুজ মসজিদ: দরগার তিন গম্বুজ মসজিদটি নবাবী আমলে তৈরী হয় বলে জনশ্রুতি আছে। এ সম্পর্কে গল্প আছে যে, জনৈক মুসলমান সওদাগর নদী পথে বিপদগ্রস্ত হয়ে হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) কে স্মরণ করেন। তিনি সে বিপদ থেকে মুক্ত হয়ে এই মসজিদ নির্মাণ করেন। এর দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট, প্রস্থ ১৬ ফুট, ভিতরের পরিসরের দৈর্ঘ্য ৩৪ ফুট সাড়ে ৫ ইঞ্চি, প্রস্থ ১০ ফুট ১০ ইঞ্চি। তিনটির মেহরাবের মধ্যে মধ্যবর্তীটি অপেক্ষাকৃত বড়। উত্তর-দক্ষিণ দেয়ালে দুটি করে ৪টি তাক ও ১টি করে দুটি জানালা আছে। পূর্ব দেয়ালে সমপরিমাপের ৩টি প্রবেশ পথ। এর কপাটগুলো পরবর্তীকালে নির্মিত হয়। ২০ শতাব্দীলর গোড়ার দিকে পরপর দুটি বারান্দা ও মিনারটি নির্মিত হয়।
শিলালিপি ও আলীকুলি বেগ: হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) এর সমাধি সৌধের প্রবেশ দ্বারের উপরিভাগে জনৈক আলীকুলী বেগ কর্তৃক রচিত দৈর্ঘ্য ১০ ইঞ্চি ও প্রস্থ ৩৬ ইঞ্চি চার লাই বিশিষ্ট একটি ফারসী ভাষার লিখিত শিলা লিপি আছে। এই লিপিতে ১০৪৫ হিজরীতে শাহ্ দরবেশের কবরের উপর গম্বুজ নির্মাণের কথা উল্লেখ আছে। (১০৪৫ হিজরী বা ১৬৩৫ খ্রিঃ) শিলালিপির সারমর্ম অনুযায়ী আলীকুলী বেগ দ্বাদশ মতাবলম্বী গোড়া শিয়া মুসলমান এবং পারস্যের (ইরান) শাহ্ আব্বাসের একজন ভক্ত ছিলেন। তিনি হয়ত এদেশের নবাগত হিসাবে স্থানীয় মুসলমানদের সহনুভূতি ও সদিচ্ছা লাভের আশায় হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) এর সমাধি সৌধ নির্মাণ করেছিলেন। আলীকুলী বেগ হয়ত হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) এর প্রকৃত পরিচয় জানতেন না। তাই তিনি লিপিতে শাহ্ দরবেশ হিসেবে হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) কে সম্বোধন করেছেন। অথচ ফারসী তায়েদাদে হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) নামের উল্লেখ আছে এবং আজও তিনি হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) সাহেবের দরগা, হিন্দুদের নিকট মখদুম বাবা ইত্যাদি নামে অভিহিত।
বর্ণনা
বহু পীর সাধকের পুণ্যভুমি রাজশাহী মহানগরী। যখন এই জনপদের মানুষ কুসংস্কার আর অপপ্রথার নিবিড় অন্ধকারের অতল গহ্বরে ডুবে থেকে নানান কুকর্মে লিপ্ত ছিল, দেব-দেবীর নামে নরবলি দেয়া হতো, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ছিল প্রকট, তখন থেকেই এ সকল পীর সাধকের আগমন ঘটতে থাকে সুদূর মধ্য প্রাচ্য ও অন্যান্য অঞ্চল থেকে। তারা অবোধ মানুষের মাঝে জ্ঞানের শিখা ছড়ানোর মহৎ উদ্দেশ্য ও বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ের প্রতিজ্ঞায় ও মনুষ্য সম্প্রদায়ের কল্যাণে জীবনের সব সময়টুকু ক্ষয় করে দেন। তাদের ডিঙ্গাতে হয় নানা প্রতিকূলতার দেয়াল। এমনকি প্রাণ বিসর্জনও দিতে হয় কাউকে কাউকে। এ সকল মহৎ প্রাণের অন্যতম পদ্মা পাড়ে চিরশায়িত হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ)।
কাজী রওশ আলী সম্পাদিত বিভাগ গাইড রাজশাহী গ্রন্থে ও হজরত শাহ মখদুম (রহঃ) দরগাহ পাবলিক ওয়াকফ এস্টেট ট্রাস্টি বোর্ড প্রকাশিত ইতিহাস ও ঐতিহ্য গ্রন্থে অধ্যাপক মুহম্মদ আবু তালিব একখানি প্রাচীন বাংলা গ্রন্থের কলমী পুথি। হজরত শাহ মখদুম (রহঃ) এর জীবনী তোয়ারিখ প্রবন্ধে হজরত শাহ মখদুম (রহঃ) এর প্রকৃত নাম হজরত সৈয়দ আব্দুল কুদ্দুস হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে প্রবীণ লেখক অধ্যাপক এবনে গোলাম সামাদ তার রাজশাহীর ইতিবৃত্ত গ্রন্থে বলেন, “এই পীরের (হজরত শাহ মখদুম রহঃ) আসল নাম কি ছিল, তা নিয়েও আছে বিতর্ক। তিনি সাধারণভাবে রাজশাহী বাসীর কাছে বাবা মখদুম নামেই পরিচিত।” তিনি আরো উল্লেখ করেন, মখদুম শব্দটি আরবী। শব্দগত অর্থে শিক্ষক, জ্ঞানী অথবা পরিচালক। তবে তিনি আধ্যাত্মিক সাধক, জ্ঞানী, কামিলিয়াত ছিলেন এই বিষয়ে কেউ দ্বিমত প্রকাশ করেনি। বিভিন্ন গ্রন্থে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যায়, হজরত শাহ মখদুম (রহঃ) ছিলেন বড় পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ) এর পৌত্র এবং আজাল্লা শাহ্ এর ২য় পুত্র। তিনি ৬১৫ হিজরীর ২ রজব বাগদাদে জন্ম গ্রহণ করেন। রুপোশ তার উপাধী। শব্দটি ফারসী। যার অর্থ মুখ আবরণকারী। তার উপাধি থেকে একথা বোঝা যায় যে, সাধারণ মানব বৈশিষ্ট্য ছাড়াও তার মধ্যে অসাধারণ ক্ষমতা লুকায়িত ছিল। হজরত শাহ মখদুম (রহঃ) এর রাজশাহী আগমনের অন্তরালে আছে এক বিস্তৃত ইতিহাস।
১২৫৯ খ্রিষ্টব্দে মোধল বীর হালাকু খান বাগদাদ আক্রমণ করলে বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানীর বংশধরগণ বাগদাদ থেকে কাবুল, কান্দাহার, পারস্য ও পাক ভারতের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় গ্রহণ করে। হযরত শাহ্ মখদুম রুপোশ (রহঃ) এর পিতা আজ্জালা শাহ্ দিল্লীতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। তার উন্নত চরিত্র ও গুণাবলীর প্রতি মুগ্ধ হয়ে দিল্লীর সম্রাট ফিরোজ শাহ্ তার কাছে বায়েত হন। পিতার সহচার্যে তিন পুত্র সৈয়দ মুনির উদ্দীন আহমেদ (রহঃ), হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ), ও সৈয়দ আহমদ তম্বরী (রহঃ) অধ্যাত্মিক সাধনায় সমৃদ্ধ লাভ করেন। হালাকু খানের মৃত্যুর পর শাহ আজ্জালা বাগদাদে ফিরে গেলেও তার পুত্রগণ ইসলামের বাণী প্রচারের মাধ্যমে মানুষকে হেদায়েতের উদ্দেশ্যে অনুচরবর্গসহ বাংলায় আগমন করেন। তখন রাজশাহীর নগরীর নাম ছিল মাহকাল গড়। এখানে মাহকাল দেও এর বিখ্যাত মন্দিরে নরবলি দেওয়া হতো। তার স্মৃতি এখনও হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) এর পবিত্র দরগা শরীফে রক্ষিত আছে। মহাকাল গড়ে সে সময় বহু রকম দেও এর প্রতিমূর্তি ও মঠ-মন্দিরে পূর্ণ ছিল।
হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) রাজশাহী আগমনের ১০ বছর পূর্বে হযরত তুরকান শাহ্ ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে ১২৭৯ খ্রিষ্টাব্দ মহাকাল গড়ে আগমন করেন। ঐ সময়ে রাজ্য শাসন করতেন অংশুদেও চান্তভন্ডী বর্মভোজ ও অংশুদেও খেজ্জুর চান্দ খড়গ বর্মগুজ্জুভোজ। মুসলিম বিদ্বেষী এই রাজাগণের দ্বারা তুরকান শাহ্ ও তার অনুচরগণ শহীদ হন। তার মাজরও দরগা পাড়ায় আছে। তুকান শাহ্ ‘র আগমনের পূর্বেও কতিপয় মুসলমান ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে মহাকাল গড়ে আগমন করেন এবং শহীদ হন। এসকল হত্যাকন্ডের প্রতিশোধ ও ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) ১২৮৯ খ্রিষ্টাব্দে এ দেশ আগমন করে বাঘা নামক স্থানে উপস্থিত হন এবং ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি যে স্থানে কেল্লা নির্মাণ করেছিলেন তা মখদুম নগর নামে খ্যাত। বাঘা ছিল তৎকালীন সময়ের প্রসিদ্ধ নগরী। এই নগরীর সাথে সুলতানগণের প্রশাসনিক যোগসূত্র ছিল। গৌড়ের সুলতান হোসেন শাহ্ র পুত্র নসরৎ শাহ্ ৯৩০ হিজরিতে বাঘা শরীফ পরিদর্শন করেন এবং একটি মসজিদ ও একটি পুকুর খনন করার নির্দেশ দেন। দিল্লীর বাদশাহ শাহজাহান মখদুম নগরীতে অবস্থিত মখদুম দরগাহ সংরক্ষণের জন্য ৪২টি মৌজা দান করেছিলেন।
হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) কর্তৃক মহাকালগড় দখল সম্পর্কে বেশ লোমহর্ষক ও রহস্যময় ঘটনা শোনা যায়। কথিত আছে মহাকাল গড়ের এক নাপিতের ৩টি পুত্র সন্তান ছিল। তন্মধ্যে দুটি নরবলি হওয়ার পর শেষ পুত্রটিও নরবলি দেবার সিদ্ধান্ত হয়। একথা জানার পর নাপিত দম্পতি দুঃখে শোকে ব্যাকুল হয়ে পড়েন এবং নিরুপায় হয়ে গোপনে মখদুম নগরে উপস্থিত হন। হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) বিস্তর ঘটনা শোনার পর বলেন, যাও তোমার সন্তানসহ নদীর ধারে অপেক্ষা কর আমার সাক্ষাৎ পাবে।
এই নির্দেশ পাওয়ার পরে বেশ কদিন নাপিত দম্পতি নদীর তীরে অপেক্ষা করেও হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) সাক্ষাৎ না পেয়ে বলি হবার পূর্ব রাতে ডুবে মরার ইচ্ছায় পদ্মার পানিতে নামতেই হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) পদ্মায় কুমিরে চড়ে আবির্ভূত হন এবং নাপিত দম্পত্তির সাথে কিছু কথা বলেন এবং পুত্র বলি না হওয়ার ও দেওরাজ ধ্বংস হওয়ার আশ্বাস দিয়ে কুমিরে চড়েই অন্তর্ধান হন। হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) এর জীবনী তোয়ারিখে উল্লেখ আছে, মহাকালগড়ের মন্দির প্রাঙ্গণে প্রাচীর বেষ্টিত যাদুকুন্ড কূপ ছিল। দেও রাজাদ্বয় তা দ্বারা যাদুবিদ্যা পরিচালনা করে অসম্ভব অলৌকিক কার্য সফল করে নিজেকে ঈশ্বর হিসেবে দাবি করত। হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) ঐ নাপিতের কাছে সন্ধান নিয়ে যাবার কালে ঐ স্থান পরিদর্শন করে ঐসব যাদুগুণ নষ্ট করে যান। পরে ঐ যাদু স্থান উৎঘাটন করা হয়। তার তলদেশ হতে বিভিন্ন দেও পুতুল, নানা প্রকার জিনিস, অস্থী এবং ১টি জলীয় বৃক্ষ বের হয়েছিল। বর্তমানে ঐ স্থান পুকুর রুপে রয়েছে।
রাত অবসানের পর সকালে নাপিত পুত্রকে বলি দেবার জন্য দেও মন্দিরে আনা হলো। কিন্তু খাড়ার ঘাতে নাপিত পুত্র বলি হওয়া তো দূরের কথা বিন্দুমাত্র কষ্টও অনুভব করল না। বরং মহাকাল প্রতিমা পড়ে যাবার মত লেতে শুরু করল। দেওরাজের নিকট এ সংবাদ পৌছালে সে ছুটে এসে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এই নরে দোষ আছে বলে নাপিত পুত্রকে ছেড়ে দেয়। এর কয়েক দিন পর হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) দেওরাজ্যের বিরুদ্ধে মহাকালগড় জয়ের উদ্দেশ্যে মওলাং ফকির, দরবেশ, গাজি দল পাঠিয়েছিলেন। পর পর তিনবার যুদ্ধ করার পর হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) মহাকালগড়ে নরবলি প্রথার পরিবর্তে ইসলামের ঝান্ডা উড়িয়েছিলেন। প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল বর্তমান ঘোড়ামারায়। এই যুদ্ধে দেও ধর্মাবলম্বীসহ অনেক ফকিরগণও মারা পড়েছিলেন এবং তাদের ঘোড়াও শহীদ হয়েছিত। ঘোড়া শহীদের কারনেই স্থানটির নামকরণ হয় ঘোড়ামারা। দ্বিতীয় যুদ্ধে হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) সাহেব মওলাং ফকির দরবেশকে গাজী প্রেরণ করেছিলেন এবং তিনি স্বয়ং বহু মওলাং ফকির সঙ্গে করে মহাকালগড়ে উপস্থিত হয়েছিলেন। যুদ্ধে বহু দৈত্য ধর্মাবলম্বী ধরাশায়ী হয়েছিল।
অনেক মঠ-মন্দির ভেঙ্গে চুরমার ও লুণ্ঠিত হয়েছিল। দৈত্যরাজ স্বপরিজনে পালিয়েছিল এবং হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) বিজয়ী হয়ে মখদুম নগরে প্রত্যাগমন করেছিলেন। এরপর বনবাসী দৈত্যরাজের দৈত্য ধর্মাবলম্বীরা পুনরায় সমবেত হয়ে তীর্থস্থান উদ্ধারের জন্য মাহাকালগড়ে উপস্থিত হয়েছিল। এই সংবাদ পেয়ে হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) পুনরায় মহাকালগড়ে আগমন করে সমবেত প্রতিপক্ষ দলকে পাক পায়ের মাত্র ১ পাট খড়ম ছুড়ে ধরাশায়ী করেছিলেন। অবশেষে পরিজনসহ দেওরাজ তার পায়ে পড়ে আত্মসমর্পণ করেছিল ও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল। হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) মহাকাল দেও মন্দিরেই আস্তানা স্থাপন করেছিলেন। পানি পথে তার ছিল কুমীর বাহন, শুন্য পথে বসিবার পীড়ি আসন বাহন, শুস্ক পথে সিংহ ও বাঘ্র বাহন। তার অলৌকিক ঘটনা, বোজর্গী কেরামত দেখে অনেকে ঈমান এনে মুসলমান হয়েছিল। অনেকে সভ্য হিন্দু সমাজে নীত হয়েছিল ও অনেকে তাকে বড় যাদুগরী বলে প্রচার করেছিলন।
হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) বাংলায় দেওজাতিকে ইসলামের সমহান আদর্শে দিক্ষীত করার উদ্দেশ্যে ১২৮৯ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী বা সেকালের মহাকালগড়ে আগমন করে সফল নেতৃত্ব দান করে ১৩৩১ খ্রিষ্টাব্দে পরলোক গমন করেন। তার মৃত্যর পরও দরগা শরীফকে কেন্দ্র করে ইসলাম প্রচারের কাজ চলতে থাকে। তার শিষ্য ও অনুসারীগণের মধ্যে অন্যতম হিসেবে যাদের নাম পাওয়া যায় তারা হলেন- হযরত শাহ্ আব্বাস (রহঃ) (মখদুম নগরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তার মাজার বিলীন হয়ে গেছে), শাহ্ রকম আলী (রহঃ) (পুঠিয়া-বিড়ালদহ), হযরত দিলাল বোখারী (রহঃ) (আলাইপুর, বাঘা), হযরত শাহ্ সুলতান (রহঃ) (সুতানগঞ্জ, গোদাগাড়ী)
৫.শহীদ জিয়া শিশু পার্ক
মহানগরীর নওদাপাড়া বড় বনগ্রামে শহীদ জিয়া শিশু পার্ক নির্মিত হয়েছে। বিমান বন্দর রোডের পোস্টাল একাডেমীর বিপরীত পাশের অর্থাৎ রোডের পূর্ব পাশের রাস্তা ধরে কিছু দূর এগুলেই এ পার্কটি সবার চোখে পড়বে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন পার্কটি তৈরী করেছে। পার্কটি নির্মানে ব্যয় করা হয় ১১ কোটি টাকারো বেশী। ১২.২১ একর জায়গা জুড়ে পার্কটিতে স্থাপন করা হয়েছে ১৯টি আইটেমের ৭০টি গেমস প্লে। আইটেমগুলো হচ্ছে মেরী গো রাউন্ড, মিনি রেলকার, মনোরেল স্কাই বাইক, ফ্লুম রাইডস, অক্টোপাস, সুপার সুইং, বাম্পার কার, বাম্পার বোট, কিডি রাইডস, ফিজিওলজিক্যাল গেমস, থ্রিডি মুভি থিয়েটার, পেডেল বোট, বাউন্সি ক্যাসেল, হর্স রাইড, ফ্রগ জাম্প, হানি সুইং, প্যারাট্রুপার, টি কাপ ও ব্যাটারী কার। হ্রদের মাঝখানে কৃত্রিম পাহাড় তৈরি করে পার্কটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাহাড়ের ভিতর দিয়ে মিনি রেলকার যাবার জন্য দুপাশে দুটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। বিচিত্র জন্তুর মুখ ও বরফ ঘর সদৃশ্য বেশ সুন্দর প্রবেশ গেটের সঙ্গে আছে দোতলা ভবনের অফিস। এ ভবনের দোতলায় নামাজের ঘর আছে। বিভিন্ন জীব-জন্তু কারুকার্য খচিত সীমান দেয়াল নজর কাড়ার মত। পার্কের ভিতরে বিভিন্ন জায়গায় পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক টয়লেট, পৃথক ২টি ড্রেসিং রুম আছে। ভিতরের আইটেমগুলো এনজয় করার টিকিটের জন্য তিন দিকে ৩টি কাউন্টার আছে। পার্ক থেকে বের হবার গেটটি অক্টোপাস সদৃশ্য। পার্কটি ঠিকা ভিত্তিক তৈরি করেছে ডেটস অ্যান্ড উষা কনসোর্টিয়াম। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের এই পার্কটি নির্মাণের জন্য ১৯৯৫ সালে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। ঐ প্রকল্পে আইটেম ছিল মাত্র ৫টি। বিভিন্ন জটিলতার কারণে ঐ প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। বর্তমান প্রকল্পেরে ভিত্তিতে নির্মিত পার্কের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয় ৯.২.০৫ তারিখ সন্ধায়। তবে পার্ক স্থাপনের কাজ শুরু হয় ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারীতে। ০১.০২.০৬ তারিখে পার্কটি সর্ব সাধারনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে খুলে দেয়া হয়। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া ২৫.০২.০৬ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে পার্কটি উদ্বোধন করেন।
৬.টি-গ্রোয়েন ও পদ্মার তীর
রাজশাহী শহরের পাশে পদ্মার তীরে ইংরেজি ‘টি’ আকৃতির বাঁধ এখন শহরের অন্যতম বেড়ানোর জায়গা। পদ্মার শীতল বাতাসের পরশ নিতে প্রতিদিন বহু মানুষ এখানে জড়ো হন। পদ্মায় এখন পানি এসেছে। এখান থেকে নৌকা ভাড়া করে তাই ঘুরে আসতে পারেন পদ্মার কোনো চর।টি (T) আকৃতিক গ্রোয়েন ও নদীর তীর মহানগরীর অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র। প্রতিদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত অসংখ্য মানুষ বিশাল নীলাকাশের নিচে সূর্যের সোনালী কিরণ মাখা পদ্মার ওপারের বেলে ভূমি, সবুজ প্রকৃতি দেখা ও পদ্মার হিমেল বাতাস গায়ে মেখে সারা দিনের অবসাদ দুর করার জন্য ভিড় জমায়। অনেকে ভাড়া নৌকায় পদ্মার ওপারে ঘুরে আসে। বাদাম ভাজা, মুড়ি, ফুচকা, চটপটি বিক্রেতার মত ছোট ব্যবসায়ীরা ভাল ব্যবসা করে এই বিনোদন প্রিয় মানুষের সঙ্গে।
৪.সাফিনা পার্ক
কিভাবে যাবেন
গোদাগাড়ী উপজেলা সদর ডাইংপাড়ার পূর্বদিকে ৮ কিলোমিটার দূরে গোদাগাড়ী-আমনুরা সড়কের পার্শ্বে দিগরাম খেঁজুরতলা। এই খেঁজুরতলা সাফিনা পার্কে যাওয়ার সময় রাস্তার দুই ধারের ফসলের যে সবুজের সমাহার ঘটেছে তা পর্যটক ও দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কাড়বে। সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:
রাজশাহী জেলাধীন গোদাগাড়ী উপজেলায় অবস্থিতসাফিনা পার্কের যাত্রা শুরু। ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের দিগরাম খেঁজুরতলায় ৪০ বিঘা জমির উপর সাফিনা পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। পার্কের ভেতরে দুইটি পুকুরের লেক ছাড়াও দর্শনার্থীদের পানিতে চলাচলের জন্য নৌকা রয়েছে। পার্কের সমস্ত এলাকা জুড়ে ফুলের বাগানের সঙ্গে রয়েছে কৃত্রিম উপায়ে তৈরিকৃত বিভিন্ন জীবজন্তু। শিশুদের বিনোদনের জন্য নগরদোলা, দোলনা, ট্রেনসহ বিভিন্ন রাইডের ব্যবস্থা। সভা-সমাবেশ, কনসার্ট ও গানবাজনার জন্য আন্তর্জাতিক মানের মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। পার্কটিতে রয়েছে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কনফারেন্স রুম। দর্শনার্থীদের খাবারের জন্য আধুনিক রেস্টুরেন্টের সঙ্গে আছে কনফেকশনারি ও ফাস্ট ফুডের দোকান। শিশুদের খেলনা সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ক্রয় করতে পারা যাবে পার্কেই। এ জন্য একটি মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। পর্যটকদের রাত্রী যাপনের জন্য পার্কটিতে বিলাসবহুল আবাসিক হোটেলের ব্যবস্থা রয়েছে। ১৩ টি অত্যাধুনিক রুমের মধ্যে তিনটি সম্পূর্ণ শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত রুম। পার্কের ভেতরে ২ টি পিকনিক স্পট রয়েছে। সবকিছু মিলেই সাফিনা পার্কের মনোরোম পরিবেশ পর্যটক ও দর্শনার্থীদের বিনোদনের পিপাসা মিটাবে। সাফিনা পার্কে প্রবেশ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে প্রত্যেক দর্শনার্থীর জন্য ২০ টাকা। গোদাগাড়ী উপজেলা সদর ডাইংপাড়ার পূর্বদিকে ৮ কিলোমিটার দূরে গোদাগাড়ী-আমনুরা সড়কের পার্শ্বে দিগরাম খেঁজুরতলা। এই খেঁজুরতলা সাফিনা পার্কে যাওয়ার সময় রাস্তার দুই ধারের ফসলের যে সবুজের সমাহার ঘটেছে তা পর্যটক ও দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কাড়বে। এখানে কিছুটা সময় কাটিয়ে সাফিনা পার্কে ঘুরে যাওয়ার সময় পদ্মানদীর ধারে সন্ধ্যার আগে সূর্যাস্ত উপভোগ করতে পারবেন।অবস্থান: গোদাগাড়ী উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নে
পিডিএফ আকরে পড়তে নিম্নের বইটি ডাউনলোড করুন..
You must be logged in to post a comment.